বাংলা চটি গল্প Bangla New Choti

টিংটং, টিংটং, …….উফফ এই অসময়ে আবার কে এলো। ঘুমঘুম পায়ে উঠে গিয়ে দরজা খুলতেই একরাশ চমক

“কিরে একেবারে হাঁ হয়ে গেলিতো! কেমন দিলাম বল। জানতাম তুই এখন নির্ঘাত নাক ডাকিয়ে দুপুরের ভাতঘুম দিয়ে ফিগারটা খারাপ করবি, তাই আর ফোনটোন নাকরে সটান চলে এলাম, কই দেখি আমার ঘরটা ঠিকঠাক গুছিয়ে রেখেছিস তো! ….” আমাকে সাইড করে বুকফুলিয়ে ঘরে ঢুকে পড়লো আকাশ, সেই এক স্টাইল..বেপরোয়া, বিন্দাস। দুনিয়া কি ভাবলো তাতে ওর কি যায় আসে! বরাবরের মত আমাকে কমপ্লিট বোকা বানিয়ে দেওয়া….কথায় কথায় হক জমানো! ইচ্ছে হলে ভালবাসায় পাগল করে দেওয়া, আর নাহলে এক সমুদ্র নিস্তব্ধতা।মাঝে মাঝে তো আবার নিরুদ্দেশ, কিছু না জানিয়েই…জানানোর ই বা কি আছে , আমি কি আর ওর বিয়ে করা বউ! bengali cute love story

খুব রাগ হয় মাঝে মাঝে, ভাবি নাহ একটা কিছু করতে হবে, আমাকে এত কাঁদায়…একটা এমন কিছু করব যাতে ও……. ওও… কাঁদবে! ধ্যাৎ, কি সব ভাবছি, ও কাঁদবে, তাও আমার জন্য! আহা ভাবতে কি দোষ! কল্পনায় ওর দুখী দুখী মুখটা দেখে একটা যেন তৃপ্তি আসে মনে। সত্যি না হলেও এই চিন্তাটাই যে কত আনন্দের ! না এটা ঠিক যে ওর এই বাউন্ডুলে, উড়নচন্ডী স্বভাব, জীবনকে বিন্দাস ভাবে নেওয়া, অগোছালো, এলোমেলো থাকা, পাগলের মত ভালবাসা..
এগুলোর জন্যই আমি ওই পিপীলিকার মত নাচতে নাচতে এগিয়ে যাই বারবার আগুনে পুড়ে মরার সুখের খোঁজে! কিন্তু তাই বলে কি ! কুঁজোরও কি চিৎ হয়ে শোবার ইচ্ছে হতে নেই! তাহলে কেন একবার কি ওই পাজিটা বলতে পারে না “মাফ করে দে না মন, আর করবো না, তোকে ছাড়া পারবো না বাঁচতে, তুই আমায় ছেড়ে যাবি না বল ….” কেন আমাকেই প্রতিবার ….কেন আমার রাগ , দুঃখ ওর চোখে পড়ে না, একবারও কি আমার অভিমান হলে রোমান্টিক হতে পারে না ও, একটু প্রেমিক টাইপ…ধুর ধুর…তালেই হয়েছে! ও আবার প্রেমিক হবে! সারা পৃথিবীতে বলে কিনা এই একটাই নমুনা….অত্যন্ত বিরল প্রজাতির, সবই আমার কপাল !

“মন, মন …তাড়াতাড়ি আয়, হাতটা পুড়ে গেল আমার, আরে,পুড়িয়ে মারবি কি মা….উফফ কি গরম, !”
হাঁকাডাকির চোটে এক দৌড়ে বেডরুমে ঢুকে দেখি হাতে ধরা প্যাকেট…দারুন গন্ধ, খুব চেনা চেনা। হ্যাঁ মিত্র কাফের ফিশফ্রাই …আমার খুব প্রিয়। আশ্চর্য পাগল তো, জানল কিকরে সারাদিন আমার কিছু খাওয়া হয় নি, আসলে একদম মন হচ্ছিল না একার জন্য কিছু করি। কদিন ধরেই এরকম অনিয়ম হচ্ছে খাওয়া দাওয়ার, আকাশের সাথে সেদিনের ঝগড়া- রাগের চোটে আমার ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসা, দুদিন অফিস ড্রপ করে নতুন বাড়ি খোঁজা, শিফট করা , ঘর সংসারের টুকিটাকি জিনিস কেনা, এত সবের জন্য…না আসলে এগুলো কারণ নয়, কারণটা ছাই আমিই কি জানি….খিদেই পায় নি সকাল থেকে! bengali cute love story

“কি হল !শুধু দেখবি নাকি খাবিও, তুই তো আবার ঠান্ডা হলে খেতে পারিস না, কত তাড়াহুড়ো করে আনলাম, আমার কিন্ত বাবা হেব্বি খিদে পেয়েছে, আমি এত কারো ওপর রাগ করে উপোষ দিই না জানিসই তো। পেটে খেলে তবেই তো পিঠে সইবে। জানি পাগলিটা খুব রেগে আছে আমার ওপর, সুযোগ পেলেই হাতের সুখ!”

আমার একবুক অভিমান, কান্না, কেন জানিনা ভুলে গেল সব অপেক্ষা আর উপেক্ষা।
এত ভাবে ও ! এত খেয়াল ! মনটা বেশ গলে যাওয়া আইসক্রিম হবার আগেই সামলাই নিজেকে, ..নাঃ এইটুকুতে মাফ করব না তোমায় আকাশ দত্ত…এবার তোমায় সত্যি করেই হাঁটু গেঁড়ে বসতে হবে আমার কাছে, অনেক পালিয়ে বেড়িয়েছো। আপাতত পেটে সত্যি চুহাগুলো ঝটাপটি করছে, পাগলকরা ফিশফ্রাইএর গন্ধ, তাও একবেলা উপসি মানুষের সামনে, আর সহ্য হচ্ছে না। অতএব রাগ পরে, আগে তো পেটে পড়ুক কিছু… bengali cute love story

গোগ্রাসে গিলছিলাম বোধহয়, মনের মত খাবার, নাকি মনের মত অনুভূতি…..সুখের আবেশে বেশ চোখটা বুঁজে ছিল, হঠাৎ ছন্দপতন… “আরে চোখ খুলে খাবি তো, তাকিয়ে দ্যাখ কি খাচ্ছিস..”
চোখ খুলে দেখি বিশ্বজয়ের হাসি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মূর্তিমান, আবার একটা চমক…আমার ফেভারিট….
“ওয়াও..লাড্ডু…তুই…তুই আনলি! Great ইয়ার…কিকরে জানলি সকাল থেকেই ভীষণ ইচ্ছে করছিল রে মতিচুরের লাড্ডু খেতে!”
নকল গাম্ভীর্যের মুখোশ খুলে নিমেষেই বেরিয়ে এলো আমার আমিটা…. বোকাসোকা, অভিনয় না করতে পারা …একটা আস্ত খুশি চেপে রেখে মুখ বেজার করে থাকতে পারব না সেটা ওই দস্যিটা খুব ভালোই জানে, কোন কসুর নেই তাই আয়োজনে, সুযোগটাকে কাজে লাগিয়ে বিগড়ে যাওয়া আমিটাকে আবার বাধ্য মেয়ে করায়।

“তোর ইচ্ছেগুলো আমি জানিনা বলছিস!”
এক অদ্ভুত গলায় বলে ওঠে পাগলটা, আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে, এই দৃষ্টিতে আমার সর্বনাশ নিশ্চিত, চোখ চোখ পড়তেই মনে হল আমি তলিয়ে যাব এক সমুদ্রের গভীরতায়…
ইচ্ছে করছে ধুত্তোর বলে একছুটে গিয়ে ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ি ওই বুকে, হারিয়ে যাই ওই মাতাল করা চোখে…ভালবাসি ওকে। কিন্তু তাহলে যে হেরে যেতে হয় প্রতিবারের মতো…মিটিয়ে নিতে হয় এই ভয়ঙ্কর যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা! না তা হতে পারে না দত্তবাবু!

“সত্যিই জানিস তাহলে…বাব্বা কি সৌভাগ্য আমার…গ্রেট মিস্টার দত্ত…দা বিজিয়েস্ট পার্সন…নিজের কাজকম্ম ছেড়ে কোথাকার কোন ইমন চ্যাটার্জির তোষামোদ করতে, থুড়ি ইচ্ছের খেয়াল রাখতে, সকাল থেকে এত ছোটাছুটি করছে….এটাই বোঝাতে চাইছিস কি ! আসলে এটা আমার ইচ্ছে না কি তোর এখন ইচ্ছে হল তাই ….তোর এখন হাতে সময় আছে, তাই মনে একটু প্রেমও আছে, আর আমি তো ভয়ানক হেঙলু…তাই এসব করলেই পটে যাব আমি…ঠিক হয়ে যাবে সব কিছু বরাবর যেভাবে হয়ে এসেছে তোর ইচ্ছেতে….” bengali cute love story

রীতিমত হাঁফাচ্ছি কথাগুলো বলে, কানগুলো লাল হয়ে গেছে আমার রাগে, জ্বালায়…নিজেকে বোধহয় একটু বেশিই শক্ত করতে চেয়ে।
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে এবার ও সত্যিই একবারে চুপ আশ্চর্য রকম, আস্তে আস্তে চোখ নামিয়ে নেয় আমার জ্বলন্ত দৃষ্টির থেকে। কোন রকম প্রতিবাদ ছাড়াই যেন মেনে নিল সব দোষ! একটা অসহায় দৃষ্টি নিয়ে…ইশ একটু বেশি বলে ফেললাম কি! এবার তো মনে হচ্ছে আমিই কাজটা খারাপ করলাম..এত আবেগ দিয়ে নিয়ে আসল এসব আমার জন্য, আমার খেয়াল করে.. আর আমি …হঠাৎ একরাশ অপরাধবোধ ঘিরে ধরল আমায়…..

কেন ফিরে এল ও, বেশতো চলছিল সব…সত্যি কি চলছিল, সত্যি কি ওকে ছেড়ে এই চার পাঁচ দিন আমি আমার মতো ছিলাম… নিজের কাছেই কি ভীষণ রকম অচেনা হয়ে গেছি এই কদিনে, আমার আমিটা যেন ফেলে এসেছি সেদিনেই..ওই রেন্টেড এক কামরার স্টুডিও এপার্টমেন্টে, আমাদের এক বছরের সংসারে। না সিঁথি রাঙিয়ে বউ হওয়া হয় নি এখনো, ওটা নাকি পায়ের শেকল, আকাশের কথায়। তার থেকে এই বেশ, দুজনে দুজনের মত থাকব একসাথে, নিজের নিজের জায়গাটুকু নিয়ে। কিন্তু বললেই বুঝি সব হয়…. bengali cute love story

এক বছর আগে ওর সাথে আলাপ হয় খুব নাটকীয়ভাবে। কলকাতায় একটা খুব বড় এমএনসি তে কাজ পেয়ে নর্থবেঙ্গল থেকে আসলাম এক বুক স্বপ্ন নিয়ে…নিজের একটা পরিচিতি… অর্থনৈতিক স্বাবলম্বী হওয়া.. মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় সন্তান…বাবার পাশে দাঁড়ানো,…বাবামাকে অনেক বুঝিয়ে সুঝিয়ে চলে এলাম এখানে, একটা পিজিতে থাকতাম দুজন ..না পূর্ব পরিচিত নয় … ,একসাথে থাকার সময়টাও বড়জোর দু-আড়াই ঘন্টা, ওর নাইট শিফট ডিউটি, বিপিও জব, সব চলছিল ঠিকই মাসদুয়েক, হঠাৎ একদিন সন্ধ্যেবেলা অফিস ফেরত পিজিতে ফিরে দেখি গেটের সামনে পুলিশ, ভিড়ে ভিড়…আমার রুমমেট সুইসাইড করেছে ….দীর্ঘদিন রেপ ..পিজি মালকিনের ভাই… দিনের পর দিন মেয়েটাকে বাধ্য করে ,

শেষে যখন জানতে পারে চারমাসের প্রেগন্যান্ট…বিয়ের কথা বলায় রুম খালি করে ওকে বেরিয়ে যেতে বলা হয় এমনকি ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ভাইরাল করবার হুমকিও। পুলিশ মালকিন ও তার ভাইকে তুলে নিয়ে গেল, আর বাড়িটাও শীল করে দিল…
বিপদ বোধহয় এভাবেই আসে ! জিনিসপত্র সুটকেসে ভরে কাছেই বাসস্ট্যান্ডে বসে ভাবছি এখন ঠিক কি করব। রাত হয়ে গেছে অপরিচিত শহর, মাসের শেষ, বেশি পয়সাও সাথে নেই…হঠাৎ মনে পড়ল অফিসের এক কলিগ, অন্য ডিপার্টমেন্টে অবশ্য, তবে খুব আলাপি মেয়েটা… কাছেই কোথাও থাকে যেন বলেছিল..কোন একটা ওয়ার্কিং গার্লস হস্টেলে…একরাতের জন্য নাহয় ওখানেই…

“সরি ইমন, ইস আমি তো কালই বাড়ি চলে এসেছি… এক কাজ করো, আমার এক দাদা আছে এলগিন রোডে, খুব ভাল ছেলে.. তুমি বিশ্বাস করতে পারো, কোথায় আছো এখন বলো, আমি ওকে বলে দিচ্ছি, তোমার নাম্বারও দিয়ে দিচ্ছি, অন্তত আজ রাতটা ওখানে একটা শেল্টার নিয়ে তারপর নাহয় ভাবো….”
অসহায়, বিপর্যস্ত আমি কতক্ষন ওখানে বসে ছিলাম জানিনা, হঠাৎ দেখি একটা বাইক একদম গা ঘেঁষে এসে দাঁড়ালো। আর আরোহী হেলমেট খুলে হেসে হাত বাড়িয়ে দিলো …
“হে ইউ….ইমন! পিউ মানে চিরশ্রীর কলিগ রাইট! আমি আকাশ, আকাশ দত্ত, একটা ছোটোমোট চাকরি করি, ব্যাচেলর, একা থাকি, বন্ধুবান্ধব বাড়িতে ডাকি না, স্ট্যাটাস single, প্রেম হয় নি এখনো, বাজে নেশা নেই…আর ইউ কম্ফোর্টেবল উইথ মি ফর টু নাইট??”
আমার অসহায় নিরুত্তর চোখ দুটোর দিকে চেয়ে কি বুঝলো কে জানে..

“ওকে, ডান….আয়, উঠে পর, হ্যাঁ রে বাবা তোকেই বলছি ওঠ, ওঠ, এখানে বসে থাকাটা সেফ নয় মোটেই..রাতের বেলা, সুন্দরী মেয়ে, একা, তার ওপর যেরকম অসহায় চোখমুখ বানিয়ে রেখেছিস তাতে দুদশটা দাদা, মামা, কাকু এলো বলে …সাহায্যের পুঁটুলি নিয়ে ! আরে কি হোল উঠে পর.. সাংঘাতিক ঘাবড়ে গেছিস তো? আমার কথা বলার স্টাইল টাই এরকম, কদিন থাকলে সব বুঝে যাবি। ওসব আপনি আজ্ঞে আমার বোরিং লাগে। আর তুমি বললে আবার প্রেম হয়ে যেতে পারে, তাই তুইটাই বেস্ট- বিন্দাস…নো টেনশান …”
বকবক করতে করতে পৌঁছে গেছি ওর ফ্ল্যাটে।চাবি খুলে আমাকে বলল “নে আমার অগোছালো ঘরে লক্ষী মেয়ের মত ঢুকে নিজের মত সেট হয়ে নে। আমি আসছি রাতের খাবার নিয়ে।”

সেই রাতে একটুও মনে হয় নি এই ছেলেটার থেকে আমার কোন ক্ষতি হবে, মেঝেতে গদিপাতা, সারা রাত আমি হাত পা ছড়িয়ে ঘুমোলাম আর ক্ষেপাটা মুখগুঁজে কাজ করল, সকালে ঘুম থেকে উঠতেই গরম চায়ের কাপ মুখের সামনে…”নে চাটা আমার দায়িত্ব, কিন্তু খাবার আমি ম্যাগি, ওমলেট আর ডিম সেদ্ধ পারি বাকি কিছু খেতে হলে ফিল্ডে নেমে পর, হোল রুম ইস ইয়োর্স”….
এই ভাবে মিলেমিশে শুরু হল আমাদের অভিনব সংসার এক আজব নামহীন সম্পর্কের..কিন্তু কখোন যে এই সম্পর্ক আমাদের অভ্যাস হয়ে গেল কেউই বুঝিনি।
একসাথে থাকতে গিয়ে অধিকারবোধ আসবে না, তাও কি হয়, আমারও হল, হয়ত ওরও।
“আমায় বলে যাসনি কেন…আমার চিন্তা হয় না”
“চিন্তার কি আছে, শোন, এইসব টিপিক্যাল বউ মার্কা ডায়ালগ বন্ধ কর, অত বলা টলা পারব না, দ্যাখ ফালতু আমার বউ হবার চেষ্টা করিস না! এসবের জন্যই আমি কিন্ত প্রেম বিয়ে এসবের থেকে একশ হাত পেছনে!”
আমাদের সম্পর্কটা নাকি প্রেম নয়, বন্ধুত্ব !

সেদিন অফিস যাইনি, শরীরটা ভাল লাগছে না, দুদিন থেকে তিনিও কোন অজ্ঞাতবাসে, দুপুরে এসেই জোরজুলুম শুরু..”মন শিগগির খেতে দে, হেবি খিদে পেয়েছে, বেশ জম্পেস করে তাহিরি বানা তো……”
মাথাটা হঠাৎ গরম হয়ে গেল কেন, কিসের এত জোর খাটানো…আমার কথা জিজ্জেস করলো নাতো, দেখলেও না ফিরে, আর আমাকে এখন উঠে ওর পছন্দের খাবার বানাতে হবে…মজা মন্দ নয়…
“কিরে বললাম তো, খিদে পেয়েছে, তবুও শুয়ে আছিস?
“হ্যাঁ,দেখতেই তো পারছিস, জিজ্ঞেস করছিস কেন…পারব না করতে..কেন করব…আমি কি তোর বিয়ে করা বউ!”

“ও তাই !”
“হ্যাঁ, তুইই তো বলিস বউমার্কা আচরণ না করতে, তাহলে খিদে পেয়েছে তো আমাকে জ্বালাচ্ছিস কেন!”
“আমি জ্বালাচ্ছি ! আর তুই ধোয়া তুলসিপাতা! তুই জ্বালাসনি কখনো, রাত দুপুরে …উড়ে এসে জুড়ে বসেছিস, দখল করেছিস আমার ঘর, বিছানা !”
“ও তাই, চলে যাচ্ছি তোর ঘর ছেড়ে। থাক তুই তোর ঘর বিছানা নিয়ে”
হ্যাঁ তাই যা, আর বেরিয়ে গিয়ে আবার যেন আমায় ফোন করে ডাকিস না,আকা-আ-শ একবার আয়, কোনদিকে যাব বুঝতে পারছি না”
“নিশ্চিন্ত থাক আর তোকে জ্বালাব না, কক্ষনো না, যাই কিছু ঘটুক না কেন! ”

মনটা খুব ভারভার লাগছে অত কথা শুনিয়ে, আরো খারাপ লাগছে ওর নিঃশব্দ মেনে নেওয়া, কোন আর্গুমেন্ট নেই, আত্মপক্ষ নেওয়ার জন্য আমাকে কোনঠাসা করা নেই, এটা কি সেই আকাশ! এ কোন ম্যাজিক? যাকে প্রতিনিয়ত হারাতে চেয়েছি তার এভাবে হার মানাটাও কেন কষ্ট দিচ্ছে আমায় ! ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এসবই ভাবছিলাম, হঠাৎ একটা চেনা গন্ধ, চমকে তাকিয়ে দেখি আকাশ, এত কাছে দাঁড়িয়ে যে আমার চুলগুলো ওর মুখের উপর…ওর শরীরের উষ্ণতা টের পাচ্ছি আমি..
টিমটিমে তারার আলোতেও স্পষ্ট দেখছি এক অপরিচিত উদভ্রান্ত দৃষ্টি, যে দৃষ্টিতে মিশে আছে হারিয়ে ফেলার ভয়, এ দৃষ্টি এক পাগল প্রেমিকের।
“আমার প্রতিটা মুহূর্তে শুধু তোকেই চাই রে পাগলী, আমার ঘর বিছানা তো রেখে এলি, কিন্ত আমার মনটা……”
“ছাড় আমাকে!”
“না ছাড়ব না, কক্ষনো না”

সমস্ত শক্তি দিয়ে ওর থেকে নিজেকে মুক্ত করতে যাবার আগেই দুহাত দিয়ে আমাকে বুকে টেনে নিয়ে কানে কানে বলে …
“মন তুই আমার হবি ? আমার এলোমেলো জীবনের সঙ্গী ?……আমার জন্য খোঁপায় জুঁই ফুলের মালা লাগাবি, কপালে লাল টিপ, হাতে ঝনঝন করবে একরাশ কাঁচের চুড়ি… চাঁদের আলোয় আমার আঙুল গুলো ধরে হাঁটবি আমার পাশে পাশে, সমুদ্রের ঢেউ দেখে ভয়ে লেপ্টে থাকবি আমার গায়ে, তোর কথা না শুনলে ঝগড়া করবি, তোর পছন্দের পিজা আনতে ভুলে গেলে ঠোট ফুলিয়ে মান করবি আর ঝগড়া মিটে গেলে আমার বুকের ওপর মাথা রেখে শুয়ে স্বপ্ন দেখবি…বলনা মন, বিয়ে করবি আমায়, প্লিজ… তোকে ছাড়া পারব নারে বাঁচতে…ভালবাসি তোকে খুউব….তিন সত্যি…..”
নিজেকেই একটা চিমটি কেটে দেখি … স্বপ্ন দেখছি না তো! নিজের অজান্তেই কখোন আঁকড়ে ধরেছি ওকে জানি না, এক অনাবিল সুখের আবেশে ভরে গেছে সমস্ত সত্তা, কানে তখনও ওই কথাটাই বাজছে।

গল্পটি কেমন লেগেছে? মাল আউট করেছেন?